“চাঁদা না দিলেই লাশ” – মিটফোর্ড হত্যা, বিএনপি-জামায়াতের মুখোশ ও নির্লজ্জ রাজনীতি
পুরান ঢাকার মিটফোর্ড। একজন সাধারণ ব্যবসায়ী সোহাগ। রাজনীতি করতেন না। চাঁদা দেননি, তাই তাকে প্রকাশ্যে খুন করা হলো। দিনের আলোয়, মানুষের সামনে। লাশের উপর নাচল খুনি। ভয়, ক্ষমতা আর নোংরা রাজনীতির কাছে আজ সব ন্যায় হেরে গেছে।
কিন্তু সবচেয়ে লজ্জার বিষয় কী জানেন?
বিএনপি চুপ। জামায়াত কথা বলছে। বলছে – “খালি নির্বাচন নির্বাচন করেন, চাঁদাবাজ খুনিদের নিয়ে কিছু বলেন না কেন?”
প্রশ্ন আসে – জামায়াত কি এতই নির্দোষ যে তারা মুখ খুলবে? যারা লগি-বৈঠার রাজনীতি দেখিয়েছে, যারা লাশের উপর নাচের রাজনীতি শিখিয়েছে, আজ তারাই বড় বড় কথা বলছে? এই না বাংলাদেশের রাজনীতি!
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান বলছেন – “আপনাদের তো শুধু নির্বাচন চাইতেই দেখি, কিন্তু চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে কথা বলেন না কেন?”
তিনি আরও বলেন, “মানুষ ঐক্যবদ্ধ হলে চাঁদাবাজরা মাটির সঙ্গে মিশে যেত।” সত্যিই তো। কিন্তু আপনি নিজে কি কখনো চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে লড়েছেন? লড়েছেন নিজের দলের খুন, ধর্ষণ, নির্যাতনের রাজনীতির বিরুদ্ধে? না। তখনও চুপ ছিলেন। আজ কথা বলছেন, কারণ ক্ষমতা চলে গেছে অন্যপক্ষের হাতে।
রফিকুল ইসলাম বললেন, “এই হত্যাকাণ্ড, থানা থেকে আসামি ছিনতাই – স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ করা উচিত।”
অবশ্যই। কিন্তু একবার ভাবুন, আপনার দলের ফ্যাসিবাদী শাসনকালে কজন উপদেষ্টা পদত্যাগ করেছিলেন মানুষের রক্তের দায় নিয়ে? কজন নেতা বিচার পেয়েছিলেন ধর্ষণ, খুন আর জুলুমের জন্য?
“বিএনপি-জামায়াত এক মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ”
বিএনপি বহিষ্কার করেছে দুই যুবদল নেতাকে। বলা হচ্ছে, “জিরো টলারেন্স।” কিন্তু প্রশ্ন একটাই – খুন হওয়ার আগেই কেন ব্যবস্থা নেননি? লাশ পড়ে গেলে বহিষ্কার? এটাই কি রাজনীতি? নাকি মুখরক্ষা?
জামায়াত নেতারা বলছেন – “মানুষ চুপ কেন? পায়ের জুতো খুলে মেরে চাঁদাবাজদের মাটি সমান করে দিন।”
সত্যি কথা। কিন্তু মানুষ জানে, আজকের বিএনপি-জামায়াতের এই ড্রামা কেবল ক্ষমতায় ফেরার জন্য। এদের রাজনীতিতে চাঁদাবাজ, খুনি, ধর্ষক – সবাই আছে। কেবল ক্ষমতার কোল পাল্টায়, অপরাধের চেহারা পাল্টায় না।
“নির্লজ্জ প্রতিবাদের প্রতিযোগিতা”
জামায়াত বলছে, “৫ আগস্টের পর আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিদায় নিয়েছে। এখন চাঁদাবাজি-সন্ত্রাস কারা করছে?”
আপনাদের জানা উচিত, ফ্যাসিবাদ শুধু সরকারে থাকে না, মনেও থাকে। আপনাদের দলের রক্তাক্ত অতীত কি মানুষ ভুলে গেছে? আপনাদের বিক্ষোভে ফাঁকে ফাঁকে যে চাঁদাবাজদের হাততালি পড়ে, সেসব কি মানুষ দেখে না?
❌ যারা জামায়াতকে ‘মুক্তির ফেরেশতা’ ভাবছেন, ইতিহাস মনে রাখুন – ওরাও একদিন রক্ত মাখিয়েছে।
মানুষ মরে যায়। রাজনীতি বেঁচে থাকে। লাশের উপর নাচ চলতেই থাকে। কেউ বলে – “বিচ্ছিন্ন ঘটনা।” কেউ বলে – “নির্বাচন চাই।” কেউ বলে – “তাদের শাস্তি চাই।” কিন্তু লাশ… লাশই থেকে যায়।
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন