Home Top Ad

banner

চাঁদা না দিলে মৃত্যু – পুরান ঢাকার রক্তাক্ত বিএনপি রাজনীতি

Share:
চাঁদা না দিলে মৃত্যু – পুরান ঢাকার রক্তাক্ত রাজনীতি

“চাঁদা না দিলে মৃত্যু” – পুরান ঢাকার রক্তাক্ত রাজনীতি ও নীরবতার লজ্জা

পুরান ঢাকার এক সাধারণ ব্যবসায়ী। রাজনীতি করতেন না। পরিচিত ছিলেন একজন পরিশ্রমী মানুষ হিসেবে। কিন্তু তার অপরাধ? শুধু এই যে, তিনি চাঁদা দেননি। আর সেই ‘অপরাধেই’ তাকে প্রকাশ্যে খুন করা হলো।

মানুষের সামনে, দিনের আলোয়, রাস্তায়। খুন করার পর তার নিথর দেহের উপর উঠে ঘৃণার এক পৈশাচিক নৃত্য পরিবেশন করলো খুনি। কেউ এগিয়ে আসেনি। সাহস করেনি। কারণ, অভিযুক্ত ব্যক্তি একজন প্রভাবশালী যুবদল নেতার পদপ্রার্থী।

এই লজ্জা কার? রাষ্ট্রের? নাকি আমাদের সবার?

একজন মানুষকে খুন করে, তার লাশের উপর দাঁড়িয়ে নাচে যাদের মন গলে না—তারা মানুষ না, তারা সমাজের ভয়ংকরতম বিকৃতি। কীট!!!!

ডিএমপির একজন অতিরিক্ত কমিশনার বলেছেন, “যা হয়েছে, তা চিন্তার বাইরে।” কিন্তু আমরা কি আর চিন্তা করি? না হয় ভাবনার ক্ষমতা হারিয়েছি অনেক আগেই?

বিএনপির জিরো টলারেন্স নাকি নিজের দোষ ঢাকার স্টান্ট?

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, “সিরিয়াস ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, বিচ্ছিন্ন ঘটনায় দোষ চাপানো নোংরা রাজনীতি।”

কিন্তু প্রশ্ন হলো – যদি বিএনপির সত্যিকারের জিরো টলারেন্স থাকতো, তাহলে খুনের আগেই কেনো ব্যবস্থা নিল না? দল থেকে বহিষ্কার করলেই কি দায় শেষ?

যুবদল আজীবন বহিষ্কার করেছে দুই নেতাকে – রজ্জব আলী পিন্টু (সাবেক সহ-জলবায়ুবিষয়ক সম্পাদক) এবং সাবাহ করিম লাকি (ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক)। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। কিন্তু মানুষ জানে, এটা কেবল মুখরক্ষার নাটক।

বাংলাদেশের রাজনীতির আসল চিত্র

৫ আগস্টের পর ‘দেশের মালিক’ হয়ে ওঠা এক রাজনৈতিক গোষ্ঠীর কাছে মাথা না ঝোকালে জীবনও নিরাপদ নয়। নতুন দিনের স্বপ্ন আমরা দেখি ঠিকই, নতুন সংবিধানের কথা বলি, ‘হাসিনা মুক্ত’ আর ‘আওয়ামী লীগ মুক্ত’ বাংলাদেশ গড়ার কথা বলি। কিন্তু যেখানে চাঁদা না দিলেই প্রকাশ্যে খুন করা হয়, সেই স্বপ্ন শুধু ধোঁয়া হয়ে মিলিয়ে যায়।

সবাই চুপ। কেউ কিছু বলে না। কেউ প্রতিবাদ করে না। শুধু একটা লাশ পড়ে থাকে রাস্তায়, আর আমরা মুখ ফিরিয়ে নেই।

🔻 এই নীরবতা, এই লজ্জা কোথায় রাখি?

আজকের বাংলাদেশে – অপরাধী জন্মায় রাজনৈতিক ছত্রছায়ায়। অপরাধ করলে বলা হয় ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’। শেষে বহিষ্কার করে দায়মুক্তি দেখানো হয়। এভাবেই চলে দোষ ঢাকার নোংরা রাজনীতি।

একজন মানুষ মরে যায় রাস্তায়, আর আমরা কেবল মুখোশধারী নেতাদের বিবৃতি শুনে শান্তি খুঁজি।

শেষ প্রশ্ন

এই বাংলাদেশ কি আমরা চেয়েছিলাম? যেখানে রাজনৈতিক পরিচয় বর্ম হয়ে দাঁড়ায়, আর ন্যায়ের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে যায় ভয় আর নির্লজ্জ নীরবতায়?

কোন মন্তব্য নেই